প্রান্তজন ডেস্ক: সারাদেশে যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে মহান বিজয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। এরই আলোকে বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) সব সরকারি আধা-সরকারি স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) জানায়, বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে সদর দফতরের ৯ পদাতিক ডিভিশনের (সাভার সেনানিবাস) সার্বিক তত্ত্বাবধানে যথাযোগ্য মর্যাদায় সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর একটি সমন্বিত দল সশস্ত্র অভিবাদন ও পুস্পস্তবক অর্পণ করে স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহত শহীদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে।
ওই অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম শামিম উজ জামান এবং প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমেদ চৌধুরী জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। এসময় যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে জাতীয় সংসদের স্পিকার, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রীবর্গ, কূটনীতিক, তিন বাহিনীর প্রধান, জিওসি ৯ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার এবং সাভার এরিয়াসহ উচ্চপদস্থ সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তারা এবং অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, ঢাকায় পুরাতন বিমান বন্দর এলাকায় জাতীয় প্যারেড স্কোয়ারে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত একত্রিশ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির অনুষ্ঠানমালার সূচনা করা হয়। জাতির উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বাণী প্রধান করেন। দিবসটি সাধারণ ছুটি হিসেবে পালিত হয়।
সশস্ত্র বাহিনীর সকল মসজিদে বিজয় দিবসের দিন শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বাস্থ্য, জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি এবং সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
এ উপলক্ষে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে বুধবার মধ্যরাত পর্যন্ত সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ; সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী সদর দফতর, ফরমেশন সদর দফতর, গুরুত্বপূর্ণ ভবন, ফটকসমূহে এবং নৌবাহিনীর জাহাজসমূহে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়।
এছাড়া, সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট, ঘাঁটি ও জাহাজসমূহের সৈনিক, নাবিক ও বিমান সেনা মেসসমূহ ও সামরিক হাসপাতালসমূহে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়। সশস্ত্র বাহিনীর আওতাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে জাতীয় পর্যায়ে আয়োজিত অনলাইন, ইমেইল ও ডাক যোগে রচনা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ এবং অনলাইনে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতারও আয়োজেন করা হয়।
আইএসপিআর আরও জানায়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে মহান বিজয় দিবস-২০২০ বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। নতুন প্রজন্মের নিকট মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার লক্ষ্যে ঢাকার আমিন বাজার থেকে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত সড়কের দুই পার্শ্বে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ ও বিজয় দিবসের চেতনা সম্বলিত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্যানার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ড স্থাপন করা হয়। এই সকল ব্যানার ও বিলবোর্ড সমূহের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধ তথা বাঙালি জাতির অমর ইতিহাসের ও ঐতিহ্যের প্রতিফলন ঘটানো হয়। এছাড়াও উক্ত সড়কের দুই পার্শ্বে বর্তমান সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের ছবি প্রদর্শিত হয়।
এ উপলক্ষ্যে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে সৌন্দর্যবৃদ্ধির নিমিত্তে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার রং এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ লাল ফুল এবং সবুজ পাতার প্রাধান্য দিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হয়। দিবসটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য বিগত বছরের ন্যায় এবারও যথোপযুক্ত দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করা হয়।